১৯৫৪ সালের ২২ জুন একটি ভ্রাম্যমান মোটর ভ্যানে স্থাপিত ১ কিলোওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ট্রান্সমিটার দিয়ে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়। পরে ১৯৬২ সালের প্রথমদিকে কালুরঘাটে ১০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সমিটার স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হলে পরীক্ষামূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচার কার্যক্রম শুরু হয় ঐ বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে। এরপর ১৯৬৩ সালের ১ মার্চ তারিখে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণার মধ্যদিয়ে নিজস্ব অনুষ্ঠান প্রচারের যাত্রা শুরু হয়। চট্টগ্রাম মহানগরীর বাণিজ্যিক এলাকা আগ্রাবাদস্থ শেখ মুজিব রোডে বর্তমান বাংলাদেশ বেতারের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কেন্দ্র অবস্থিত। এ ভবনটি থেকে ১৯৬৪ সালের ২৭ অক্টোবর হতে অনুষ্ঠান প্রচার কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে এর প্রচার ব্যাপ্তি মধ্যম তরঙ্গ ছাড়াও এফ এম তরঙ্গেও সম্প্রসারিত হচ্ছে। মধ্যম তরঙ্গ ৮৭৩ কিলোহার্টজ-এ প্রতিদিন ১৪ ঘন্টা নিজস্ব অনুষ্ঠান এবং এফ এম ৮৮.৮ মেগাহার্টজ-এ মধ্যম তরঙ্গের অনুষ্ঠানসহ প্রতিদিন বিবিসি, এন এইচ কে-এর অনুষ্ঠান প্রচারিত হচ্ছে। এছাড়াও ৯০.০ মেগাহার্টজ-এ সি আর আই-এর ১৮ ঘন্টা অনুষ্ঠান সম্প্রচার হচ্ছে । ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ-এ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকেই বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করা হয়। মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে চট্টগ্রাম বেতারের ভূমিকা সর্বজন স্বীকৃত। ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় ফ্রন্ট হিসেবে কাজ করেছিল। যুগিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অসীম সাহস এবং উদ্ধুদ্ধ করেছিল মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে। চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের কলা-কুশলীদের সমন্বয়েই সূচিত হয়েছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। স্বাধীনতার পূর্বে এ বেতার যেমন গণমানুষের কৃষ্টি, ঐতিহ্য, শিল্প-সাংস্কৃতি, শিক্ষা, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিসহ বিভিন্নক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছিল; তেমনি স্বাধীনতার পর নতুন উদ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে শিক্ষা, সংস্কৃতি, উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে সরকারি কার্যক্রমের সাথে জনগণের মেলবন্ধন সৃষ্টিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণসহ সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করে আসছে; তেমনি দিনবদলের পালায় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া এবং রূপকল্প-২০২১ অর্জনে সরকারি লক্ষ্যের সাথে জনগণকে একীভূত করার প্রয়াসে গান, নাটক, স্পট, জিংগেল, বহিরাঙ্গনসহ বিভিন্ন আঙ্গিকে বৈচিত্র্যময় অনুষ্ঠান প্রচার করে চলেছে। বর্তমানে এ কেন্দ্রের কভারেজ এরিয়া হলোঃ ১০ কিঃওঃ ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে এফ এম ব্যান্ডে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম ও পার্শ্ববর্তী ২০কিঃমিঃ (চারদিকে), ১০০কিঃওঃ ট্রান্সমিটারের মধ্যম তরঙ্গে মাধ্যমে বন্দর নগরী চট্টগ্রামসহ চট্টগ্রাম জেলা ও পার্শ্ববর্তী খাগড়াছড়ি, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লা জেলার দক্ষিণের অংশ বিশেষ ।